জাকির সিকদারঃ সাভারে মোহাম্মদ লিটন নামের এক ব্যবসায়ী গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনার ৪দিন পর মামলা হয়েছে। আজ শুক্রবার (১৬-৯-২০১৬) ঢাকা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) এনায়েত হোসেন বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় ৬ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক সাইফুল ইসলামসহ ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন, সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকার সিটি সেন্টার বিপণিবিতানের সিনহা কালেকশনের মালিক সোহেল রানা, যে বাসায় গুলির ঘটনা ঘটেছে সেই বাসার মালিক পারভেজ এবং শান্ত, মনির হোসেন ও মোহাম্মদ আলী।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত সোমবার রাতে সাভার পৌর এলাকার গেন্ডা মহল্লার পারভেজের বাড়িতে জুয়ার আসর বসে। ওই আসরে লিটন, সাইফুলসহ অন্যরা ছিলেন। জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে তাঁদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে সোহেল শটগান দিয়ে লিটনকে গুলি করেন। গুলি ডান পায়ে লাগলে লিটন মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন। গুলির শব্দ ও তাঁর চিৎকারে এ সময় আশপাশের লোকজন ছুটে এলে অন্যরা পালিয়ে যান। পরে স্থানীয় লোকজন গুলিবিদ্ধ লিটনকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
লিটনকে হাসপাতালে ভর্তি করার পর থেকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গোপন করার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ ওঠে। পুলিশ ও গণমাধ্যমের কর্মীদের লিটনের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছিল না। লিটনের পরিবারের পক্ষ থেকেও স্পষ্ট করে কিছু বলা হচ্ছিল না।
এসব বিষয়ে লিটনের এক আত্মীয়সহ ডিবি পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, ঘটনার সঙ্গে এনাম মেডিকেলের পরিচালক সাইফুল জড়িত থাকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গোপন করার চেষ্টা করে। আর ভয়ে মুখ খোলেননি লিটনের পরিবারের সদস্যরা।
স্থানীয় লোকজন বলেন, পারভেজ পেশায় ঝুট ব্যবসায়ী। গেন্ডায় তাঁর সাততলা বাড়ি রয়েছে। ওই বাড়ির নিচতলায় প্রতিরাতেই মাদক ও জুয়ার আসর বসে। জুয়া আর মাদকের কারণেই মামলার আসামিরাসহ আরও প্রভাবশালীদের যাতায়াত ছিল পারভেজের বাসায়। সব জানার পরও এলাকার কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পেতেন না।
সাভার মডেল থানার সহকারী পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান বলেন, ঘটনার তিন দিন পর বিষয়টি জানতে পেরে ডিবি পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করে। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছ। তাই আজ শুক্রবার মামলা হয়েছে। তিনি বলেন, জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত বলে প্রাথমিক তদন্তে প্রতীয়মান হয়েছে। মামলার অভিযোগেও সে রকমই বলা হয়েছে।
জানতে চাইলে সাইফুল বলেন, আমরা দুটি মাইক্রোবাসে করে এক জায়গায় যাচ্ছিলাম। আমি আগের গাড়িতে ছিলাম। পারভেজের বাসার সামনে পেছনের গাড়িতে গুলির ঘটনা ঘটে। অসাবধানতার বশেই গুলিটা বের হয়ে যায়।
গুলি করার অভিযোগ যাঁর বিরুদ্ধে সেই সোহেল রানার মুঠোফোনে আজ কয়েকবার যোগাযোগ করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। তবে গতকাল সোহেল কাছে দাবি করেছিলেন, ‘সাভারের থানা রোডে মাইক্রোবাসে ওঠার সময় শটগানটি লিটনের কাছে দিয়েছিলেন তিনি। তখন লিটনের হাতের চাপ লেগে গুলি বের হয়।’